Ads 468x60px

Wednesday, 23 July 2014

একটি ঠক খাওয়া

একটি ঠক খাওয়া

অস্থির সত্তা
............................
হাসতে হাসতে রিক্সায় বসে মোবাইল ফোনটা দেখছে কলিম। মোবাইলটা দামীই মনে হয়। বার বার নেড়ে চেড়ে দেখছে আর ভাবছে মোবাইল কিনবি কথা বলার জইন্য তার মধ্যে আবার গান বাজনা লাগাবি কেন? ছবি তুলবি কেন।? এতই যদি সখ ক্যামেরা কিনবি, সিডি বাজাবি মোবাইলটা কে কষ্ট দিস কেন। এভাবেই মনে মনে সদ্য চুরি করা মোবাইল টা কে হালাল করার বিভিন্ন দর্শন বানাচ্ছে কলিম ।
রিক্সা ওয়ালা কে বাড়ির ঠিকানা বলে মোবাইল টা পকেটে রেখে একটু আরাম করে বসে সে। ভাবে তার চোর জীবনের কথা। এ যাবত অনেক মোবাইলই তো সে চুরি করেছে কিন্তু আজকের মত এত খারাপ লাগে নাই তার। আচ্ছা যার মোবাইল চুরি করেছে, সে লোকটা কি করছে এখন। পুলিশের কাছে গেছে কি? নাহ এখন আর কেউ মোবাইল হারিয়ে পুলিশের কাছে যায় না। তাহলে কি লোকজনের সামনে হাউ মাউ করে কাঁদছে। কাঁদছে আর বলছে, ওরে বাবা রে ,আমার সব শেষ হল রে। কোন হারামজাদা আমার এই ক্ষতি করল রে.......
নিজের অজান্তে হো হো করে হেসে ওঠে। আমাদের মন এতটাই কলুষিত যে, আমরা অন্যের ক্ষতি দেখলে নিজের অজান্তে আনন্দ পাই আর মুখে সমবেদনা প্রকাশ করি। কলিম ও তার বাইরে নয়।
তাই ছলিম ও মুখটা বিষন্ন করে নিল। মনকে শাষাল অন্যের বিপদে হাসা ঠিক না। এমন ভাব করতে থাকল লোকটার মোবাইল চুরি হওয়ায় সেও খুব কষ্ট পেয়েছে। তাকে আটকানোর কেউ নেই এখানে । তবুও সে এমন করছে । মনে হয় অন্তরে বসা অন্তরযামীর সামনে অজান্তেই নত হচ্ছে সে।
আবারও ভাবতে খাকে। মোবাইলটায় হয়ত কোন প্রয়োজনীয় নম্বর থাকতে পারে যার কারনে হয়ত লোকটা খুব ক্ষতিতে পড়বে। হয়ত তার সন্তানের খোজ নিতে পারবেনা। এমনও হতে পারে লোকটার বউ হাসপাতালে। এখন তাকে ফোন করা দরকার। কি করবে এখন লোকটা ?
ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং....
চিন্তায় বাধা পরে কলিমের । হয়ত লোকটা ফোন করেছে। মোবাইল চুরিতো সে আজকে প্রথম করে না। তাই অভিজ্ঞতা থেকে জানে চুরির পর প্রথম ফোনটা ফোনের মালিক করে। প্রথমে অনুরোধ পরে গালিগালাজ করে। সে ও কম যায় না। দারুন দারুন কথা বলে, তবে কখনই গালি দেয়না সে। কারন তার পকেটে যার মোবাইল তাকে সে রিসপেক্ট করে। মোবাইল হারিয়ে গালি দিয়ে যদি লোকটার মনটা ভাল হয় মন্দ কি।
---হ্যালো। আস সালামু আলাইকুম।
অপর প্রান্তের কন্ঠ শোনা যায়-
--- ওয়ালাইকুম আস সালাম। ভাই সাহেব আমি সাহাজাহানের মা। কদমতলী থেকে।
নাহ মোবাইল ওয়ালা ফোন করে নাই। যাক গালির খাওয়ার হাত থেকে বাচা গেল।
--- হা সাহাজাহানের মা শুনতে পাচ্ছি।
--- ভাই আমার সাহাজাহানের জন্য কি করলেন। ভিটা বাড়ি বেচে আপনাকে টাকা দিয়ে তো আমরা মানুষের বাড়িতে আছি । গত বারে তো চাকুরী দিতে পারলেন না।টাকা টাও দিলেন না। বললেন পরে লোক নিলে ওর ব্যবস্থা হবে। সাহাজাহানে কইল আবার নাকি পেপারে লেখছে লোক নিব। আমার বাপ মড়া পোলাটার জন্য এবার কিছু একটা করেন।
--- আচ্ছা।
---আচ্ছা মানে? সাহাজাহান কি চাকুরী টা পাইব এবার?
--- টাকা যখন নিয়েছি কিছু একটা তো করতেই হবে।
--- আচ্ছা আচ্ছা ভাই সাহেব। আমি সাহাজান কে ঢাকা পাঠাচ্ছি। আমার মন বলছিল, আমার বসত ভিটা বেচার টাকা মারা যাবে না। ....
ফোন টা কেটে দিল কলিম। বুঝতে চেষ্টা করে ঘটনা কি। তবে চিন্তার দৌড় বেশী দুর য়ায় না। আবার একটা ফোন আসে।
ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং.... ক্রিং....
---হ্যালো
---- গুড আফটার নুন সেক্রেটারী সাহেব। কেমন আছেন?
--- ভাল।
--- আমরা তো আপনার বাসার সামনে । পার্টিকে নিয়ে এসেছি । আর সাথে পুরা টাই এনেছি।
--- পুরাটা মানে।
--- মানে ওই সারে তিন লাখই। আপনার কথাই রইল।
--- কি জন্য?
--- কি জন্য মানে। পরশুর কথা ভুলে গেলেন। হোম মিনিষ্ট্রির নিয়োগ টার ব্যাপারে।
--- ও
--- তা দরজাটা খোলার ব্যবস্থা করুন। কতক্ষণ আর বাইরে দাড়িয়ে থাকব।
--- আজীবন।
--- মানে? আপনি সেক্রেটারী স্যার বলছেন তো?
---মানে তোদের চাকুরী হবে না। চাকুরী পাবে কদমতলীর সাহাজাহান।
--- কি বলছেন এসব? আপনি সেক্রেটারী স্যার বলছেন তো?
কিছুক্ষণ নিরব থাকে কলিম। এর পর শান্ত কন্ঠে জবাব দেয়
--- নাহ । আমি সেক্রেটারী স্যার নই। অত বড় চোর এখনো হইতে পারি নাই।

3 comments:

 

Sample text

Sample Text

hit counter tumblr

Sample Text

আমাদের এই পেইজটি শধু মাত্র আপনাদের আনন্দ প্রদানের জন্য। লেখনির সাথে কোন ঘটনা বা চরিত্র কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠি বা রাজনৈতিক কোন বিষয়ের সাতে মিলে গেলে তার জন্য কর্তৃপক্ষ দ্বায়ী থাকিবে না।