
একটি প্রেমের মজার কাহিনী , গল্প নয় একেবারেই সত্যি । আমার ছোট মামা একটা
মেয়েকে খুবই ভালোবাসতো , কিন্তু তাদের এই ভালবাসা কোন পক্ষই মেনে নেয়নি ,
তাই তারা দুই জন হঠাত করেই একদিন পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে , এবং প্রায়
১০-১৫ দিন পালিয়ে থাকার পর , একদিন বাড়ি চলে আসে মামা তার বউ নিয়ে , যাই
হোক ঘটনা যখন ঘটে গেছে , সবাই মেনে নিয়েছে , কিন্তু আমার নানী , নতুন
মামী এবং মামার উপর অনেক রাগ করে আছে , কারণ ছোট ছেলেকে খুব ধুমধাম করেই
বিয়া করাতে চেয়েছিল নানী । মামা বউ নিয়ে বাড়িতে এসেছে দুই তিন দিন হয়ে
গেছে, কিন্তু নানী রাগ করে নতুন বউ সাথে কথাও বলে না , তাই আমার মামা নতুন
মামীকে শিখাইয়া দিয়েছে তুমি আমার মার সব কাজেই সাহায্য করবে এবং মাকে
কোন কাজই করতে দিবেনা , সব কাজই তুমি করবে , এবং মা কে রান্না করতেও দিবানা
সব রান্নাবান্না তুমি করবা , তাহলে খুব সহজেই মা তোমাকে মেনে নিবে , মার
ওজুর পানি গরম করে দিবে , মাথার উকুন মেরে দিবে , দেখবে আস্তে আস্তে তোমাকে
সে অনেক আদর করবে

এই বুদ্ধি শুদ্ধি বউ কে ভালো করেই শিখিয়ে দিয়েছে মামা , এবং নিজেও ভালো
সাজার জন্য ধানের জমিতে চলে গেছে ধান কাটতে , যদিও এর আগে কোন দিন সে ধান
খেতের আইল দিয়েও হাটেনাই , কিন্তু সবার কাছে ভালো সাজার জন্য বেচারা ধান
খেতে গিয়ে ধান কাটতে , ধান কেটে হয়রান পয়রান হয়ে দুপুরে বাড়ি এসেছে
ভাত খেতে । বেচারা কোন দিন এতো কষ্ট করে নাই

তাই তার ম্যাজাজ গরম হয়ে আছে , যখন ভাত খেতে বসেছে তখন দেখে ভাত সিদ্ধ
ঠিক মতন হয় নাই , তরকারীতে লবন হয় নাই , ডাইলও ফুটেনাই , মামা তখন
উত্তেজিত হয়ে বলে,




হই এই ভাত এই ডাইল এই তরকারি কে রানছে ফুটেনাই ফাটেনাই লবনা হয় নাই


এই বলে চিৎকার করে উঠেছে

তখনই আমার নানী বলে তোর বউ রান্না করেছে

তখন মামা তো হতবঙ্গ হয়ে বলে ভাল হইছ ভালো হইছে




হায়রে প্রেমের বিয়া

তার পর থেকে আমার এই মামা অনেক কিছুই সহ্য করে নিয়েছে , কারণ মামী ছিল
অনেক ধনী বাপের এক মাত্র মেয়ে , কোন দিন ভাতের পেলেট ধুয়েও ভাত খেতে
হয়নি , আর সে কিনা ভাত রান্না করে তরকারি রান্না করে , দিনে হাজারো কাজ
করতে হতো সবার কাছে ভালো সাজার জন্য

আর মামী সব কাজেই ভুল করে , কাজ আরো বাড়িয়ে দিতো

আর এই সব দেখেও চোখ বুজে সহ্য করে যেতো আমার মামা , নানীর প্যানপ্যানানি ,
মামা আমার থেকে ৪-৫ বছরের বড় হবে , তাই তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুর
মতন , তাই কিছু হলেই বলতাম

হই এই ভাত এই ডাইল এই তরকারি কে রান্না করেছে , লবন হয় নাই সিদ্ধ হয় নাই ফুটেনাই ফাটেনাই

হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ করে হাসতাম , আর মামাও রেগে ফায়ার হয়ে যেতো



, কিন্তু এখন আমার সেই মামী সব কিছুই নিজের হাতে সামলিয়ে নিয়েছে ।৩-৪ জন
মহিলা যেই কাজ করতে পারবেনা , সেই কাজ সে একাই করতে পারে , বেচারি সাড়া
দিন কাজের তালেই থাকে , নানী মারা গেছে দুই বছর হলো এতো বড় সংসার সে নিজেই
আগলে রেখেছে । আর মামা এখন একজন খাটি কৃষক । কোন দিন কেউ ভাবেনি তারা
এভাবে সব কিছু এতো সুন্দর করে গুছিয়ে নিবে । প্রথম দুই তিন বছর মামা আর
মামীর কান্ড দেখে লোকজন হাসাহাসি করতো আর ঠেশ দিতো


,
কিন্তু এখন তারা সবার কাছে আদর্শ হয়ে আছে , কিভাবে সবাইকে আপন করে নিতে
হয় বা কিভাবে সব কিছু গুছিয়ে রাখতে হয় , তায় তাদের না দেখলে বুঝাই
যাবেনা । কোটি পতি বাপের একমাত্র মেয়ে প্রেমের ফাদে পড়ে কিভাবে নিজেকে
বদলে নিয়েছে যা কল্পনাও করা যায়না । আর মামার কথা কি বলবো সে তো কোন দিন
বাজারও করে নাই , আর সে কিনা এখন ২০-২৫ কানি জমি চাষাবাদ করে , ৫-৬০০ মন
ধান গোলায় উঠায় । প্রেম অনেকের জীবন বদলে দেয় আবার অনেকের জীবন কেড়েও
নেয় ।



একজন নারী ইচ্ছা করলে একটা সংসার ধ্বংস করে দিতে পারে , আবার ইচ্ছা করলে সর্গ বানাতে পারে ।।
No comments:
Post a Comment