শত বছর আগেকার কথা। এক রাজার ছিলো হাতে চালানো অসাধারণ একটা পাথরের মেইল।এটা দেখতে যদিও অন্যান্য হাত মেইলের মতো, কিন্তু এটার ছিল একটি বিশেষ শক্তি। এই মিলটিকে
যা করতে বলা হতো, তাই এটা করে দিতো। যদি অনুরোধ করা হতো, একটি স্বর্ণ দাও। তখন তা স্বর্ণ
তৈরি করে দিতো। যদি ভাত চাওয়া হতো, তবে ভাতই বের করে দিতো। যদি টাকা চাওয়া হতো,
তবে টাকাই বের করে দিতো এটি। মোট কথা, যা-ই করতে অনুরোধ করা হতো, এই ছোট্ট হাতে চালানো
মিলটি তাই তৈরি করে দিতো।
একদিন এক চোর এই অসাধারণ মিলটির কথা শুনলো। সে তার মন স্থির করলো,এই আলাদিনের মিলটি
চুরি করবে। আর সেই থেকেই সে তার মন থেকে এইটা চুরি করার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারছিলো না।
দিন যায় রাত হয়, সে ফন্দি তৈরি করতে থাকে, কীভাবে এটা ওখান থেকে ভাগিয়ে আনা যায়।
একদিন সেই চোর পণ্ডিত ব্যক্তির মতো ভদ্র পোশাক পড়ে এক আদালত কর্মকর্তার সাথে দেখা করল,
যিনি ওই রাজ প্রাসাদে যাতায়াত করেন। তারা উভয়ে ওই মিলটির ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করলো।
চোরটি বললোঃ- "আমি শুনেছি যে, ঐ হস্ত চালিত অদ্ভুত মিলটি নাকি রাজা মহায়শয় মাটির নিচে পুতে
রেখেছেন, কারণ তিনি তাঁর মন্ত্রীদের বিশ্বাস করেন না তাই।
" আদালত কর্মকর্তাঃ- " কী ব্যাপার! এ ধরণের কথা তুমি কোথায় শুনেছ যে, রাজা মহাশয় তাঁর
মন্ত্রীদের বিশ্বাস করেন না?"
চোর বললোঃ- "গ্রামে-গঞ্জের মানুষজন এসব কথা বলাবলি করতে শুনেছি।"
তিনি মানুষটির আগ্রহ দেখে জ্বলে উঠলেন।
চোর আবার বল্লোঃ "মানুষজন বলছে, রাজা মহাশয় মাটির নীচে একটি গর্ত খুড়ে এই হাত মিলটি
পুতে রেখেছেন। কারণ তিনি ভয় পাচ্ছেন, যে কেউ এই মিলটি চুরি করে নিয়ে যেতে পারে।"
কর্মকর্তা বললেনঃ " এটা একটা আজগুবি কথা! রাজার হাত মিলটি কোর্টের ভিতরে পদ্মপুকুরের পাশে
রাখা আছে।"
চোর বললোঃ- " ও তাই!"(তার নিজের আগ্রহ মনের মাঝে চাপা দিয়ে রাখলো)
কর্মকর্তা বল্লেনঃ- " কারো এমন দুঃসাহস নেই, যে রাজার মিলটি চুরি করার চেষ্টা করতে পারে ।
এটা যেখানে পদ্ম পুকুর পাড়ে রাখা আছে, সেখানে বহুলোকের আনাগুনা সারাক্ষণ"
চোরটি এতোটাই উত্তেজিত ছিলো যে, তার সব কথাতেই হ্যাঁ হ্যাঁ বলতে ছিল, ওটা ঠিক,
ওটা ঠিক এই ভাবে।
অনেক দিন থেকে চোর ওখানকার পরিস্থিতি অবলোকন করতে থাকলো।
অবশেষে একদিন ঘোর অন্ধকার রাতে, রাজ পাসাদের দেয়াল বেয়ে পদ্মপুকুরের পাশ থেকে সেই মিলটি
চুরি করলো। সে আস্থার সাথে মনে মনে গর্ব করে বলতে লাগলো, এখান থেকে এটা নিয়ে নিরাপদে
বেড়িয়ে পড়বে। কিন্তু প্রাসাদের বাহিরে, ধরা পরার ভয়ে সে প্রচন্ড ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়লো।
তার অন্তরাত্মা ধোক ধোক করতে লাগলো, না জানি রাস্তায় কোন মানুষের সাথে মুখো মুখি হয়ে পড়ে।
সে একটি নৌকা চুরি করে তার নিজ বারিতে ফিরে যাবে মনে মনে এই সিদ্ধান্ত
স্থির করলো। অবশেষে সে নৌকা দিয়ে সাগর পার হতে লাগলো আর আনন্দে নাচতে লাগলো, এই ভেবে যে,
সে কত বড় সম্পদের মালিক হতে যাচ্ছে। তার পর সে চিন্তা করতে লাগলো, হাত মিলটাকে কী কী প্রয়োজনীয়
জিনিসের জন্য অনুরোধ করবে যা প্রয়োজন হয় সব মানুষের।
সে ভাবলো "লবন!" "লবন!"
"লবন সবার প্রয়োজন হয়। আমি এগুলো বিক্রি করে অল্প দিনেই দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদশালী হয়ে যাব।"
সে হাটুর উপর ভর করে বসে পরলো, আর হাত মিলটাকে অনুরোধ করতে লাগলো, "কিছু লবন তৈরি করে দাও,
কিছু লবন তৈরি করে দাও।" তার পর সে নাচতে শুরু করলো বড়লোক হওয়ার গান গাইতে গাইতে। এবং হাত
মিলটা লবন তৈরি করতে থাকলোই, আর থামলো না। লবনে ছোট্ট নৌকাটি টুইটুম্বুর হয়ে ভরে গেলো। তার আর
খবর নেই, যে এটাকে বলবে, "থামো, আর প্রয়োজন নেই।" সে ভাবতে থাকলো, তার অনেক চাকরানী,
কর্মচারী থাকবে, যারা তার সব কাজ কর্ম করে দেবে।
অবশেষে নৌকাটি লবনে ভরে গিয়ে সাগরে তলদেশে গিয়ে ঠেকলো।
আর চোরটি এভাবে উত্তাল সাগরে ডোবে মরে গেলো ।
এদিকে হাত মিলটি লবন তৈরি করতেই থাকলো, কারণ কেউ তো আর বলেছে না যে, থামো আর লবন চাই না।
এটা এখনো লবন তৈরি করতেই রয়েছে। তাই সাগরের পানি এতো লবনাক্ত।
Thursday, 24 July 2014
একটি চোরে শাস্তি (শিশুতোষ গল্প)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Lucky Eagle Casino & Hotel, Las Vegas - MapYRO
ReplyDeleteFind the best 당진 출장샵 prices 용인 출장안마 for 창원 출장샵 Lucky 인천광역 출장안마 Eagle Casino & 양주 출장마사지 Hotel in Las Vegas (Nevada), United States. 2021 Updated Reviews, Photos, Map, Amenities.